রবিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:৪৬ পূর্বাহ্ন
সেরীন ফেরদৌস:
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলছে, যুদ্ধও প্রায় শেষের দিকে, ১৯৪৪ সাল। আমেরিকান সৈন্যরা দখল করে নিয়েছে ভূমধ্যসাগরীয় দ্বীপ পিয়ানোসা। সেখান থেকে বম্বিং অপারেশন পরিচালিত হচ্ছে ইতালিতে আর অন্যান্য দেশে, আকাশে-মাটিতে। এই ফাঁকে গড়ে উঠেছে ছোট থেকে বড় বিজনেস, অস্ত্র-খাবার-নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ইত্যাদির লেনদেন। সৈন্যদের নিয়মিত সেক্স সরবরাহের জন্য প্রয়োজনীয় ব্রথেল। যুদ্ধ একটি অস্বাভাবিক প্রক্রিয়া, কিন্তু তারপরও দেখা যায় যে, পুঁজিবাদের কোনো দেশ নেই! আমেরিকান সৈন্যদের মেস অফিসার মাইলো, যে কিনা খাবারের ব্যবসা শুরুই করেছিল সেদ্ধ ডিম বিক্রি দিয়ে, অচিরেই হয়ে ওঠে ঝানু সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী আর আন্ডারগ্রাউন্ড চোরাকারবারি! মাইলোর চোখে শত্রুদেশ মিত্রদেশ বলে কিছু নেই। আমেরিকা যেমন, তেমন শত্রুদেশ জার্মানিও তার ব্যবসাক্ষেত্র! মাত্র ১৯ বছরের নিষ্পাপ আমেরিকান সৈন্য উচ্চবিত্ত পরিবার থেকে এসেছে যুদ্ধে। নেটলি পরিষ্কার করে বুঝতে পারে না এই যুদ্ধ কী, কেন। কার উদ্দেশ্যে সে এই ছোট্ট জীবনটি বাজি ধরেছে। সে শুধু জানে, দেশের জন্য আত্মত্যাগ মহান, এর নাম দেশপ্রেম! সে বীরের মতো প্রাণ দেবে! সে জানে, আমেরিকা পৃথিবীর সেরা দেশ, আমেরিকান সৈন্য সেরা, আমেরিকার মূল্যবোধ সেরা, যুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমেরিকা পৃথিবী রক্ষার কাজ করে চলেছে। সে বুঝতে পারে না সমস্ত প্রটোকল অমান্য করে কর্নেল ক্যাথকার্ট কেন মিশনের সংখ্যা বাড়িয়েই চলেছেন! সে আরও অনেক সহকর্মীর মতোই বুঝতে পারে না যুদ্ধের ময়দানে তারা একটি সংখ্যামাত্র! যুদ্ধের এক পর্যায়ে নেটলি মারা যায় এবং মারা যায় দলের অন্য সহযোদ্ধারা, শুধুমাত্র দুজন বাদে। তরুণ যোদ্ধা ইয়ুসারেইন, বম্বার, একের পর এক সফল মিশন শেষ করে ত্যক্ত ও বিরক্ত হতে হতে একসময় যুদ্ধ-রাজনীতির কূটকৌশলটা ধরে ফেলে। বুঝতে পারে এই যুদ্ধ অর্থহীন, এই গর্ব মিথ্যা, এই ত্যাগের আরেক নাম ক্ষয়। সে কাছে থেকে দেখতে পেয়েছে কীভাবে যুদ্ধকে ব্যবহার করছে ধূর্ত ব্যবসায়ী মাইলো, কার স্বার্থে কর্নেল ক্যাথকার্ট ক্ষমতার অপব্যবহার করে মিশন সংখ্যা বাড়িয়ে চলছে, কীভাবে ব্যুরোক্রেসি এবং আর্মি চেইন অব কমা-ের নামে স্বেচ্ছাচারিতা করছে। একের পর এক অনেকগুলো অপারেশন সাকসেসফুলি শেষ করার পর যখন তার বোধোদয় ঘটে, সে তখন অসুস্থতার অজুহাতে চলে আসতে চায় যুদ্ধের মাঠ ছেড়ে। কিন্তু পারে না, কারণ তাকে আসতে বাধা দেওয়া হয়। কিন্তু ইয়ুসারেইনের কাছে ততক্ষণে মৃত্যু এবং জীবন একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ মাত্র। মানুষের মহত্ত্ব, মহান জীবনের সেøাগান তার কাছে ব্যঙ্গাত্মক লাগে। বোমার আঘাতে অচেনা কিশোর শত্রুটির শরীর থেকে সমস্ত নাড়িভুঁড়িসহ অর্গানগুলো বেরিয়ে এলে ইয়ুসেরেইন বুঝে যেতে থাকে মানুষও নিছক একটি জৈবিক প্রাণ ছাড়া আর কিছু না!
কথা হচ্ছিল আমেরিকান ঔপন্যাসিক জোসেফ হিলারের উপন্যাস ‘ক্যাচ-২২’ নিয়ে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পটভূমিতে লেখা এ উপন্যাসে যুদ্ধের বাজারচলতি ধারণা ‘হিরোইজম’কে পাশ কাটিয়ে সামনে আনা হয়েছে যুদ্ধের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও ব্যক্তির মনস্তাত্ত্বিক বিস্তারকে। ঠাট্টার ভাষায় যুদ্ধের মতো একটা সিরিয়াস ব্যাপারকে বিস্তৃত একটা প্রেক্ষাপটে ধরতে গিয়ে লেখক ভাষা নিয়ে ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। যে কোনো যুদ্ধকেই গ্লোরিফাই করা হয়ে থাকে দেশপ্রেম, মুক্তি, বিজয়, জাতীয়তা, শ্রেষ্ঠত্ব ইত্যাদি নানান নাম দিয়ে যা বলির পাঁঠার মতো সাধারণ মানুষগুলোর ওপর চেতনানাশক আফিমের মতো কাজ করে এবং এটাই চায় ক্ষমতাসীনরা। ক্ষমতাসীনের স্বার্থ আর সাধারণ মানুষের স্বার্থ কখনোই এক রাস্তায় থাকে না। এবং প্রায়শই এ কথাগুলোও বলার বা লেখার উপায় থাকে না। জোসেফ হিলার তাই ঠাট্টা এবং কিছুটা অ্যাবসার্ডিটিকে অবলম্বন করে যুদ্ধের কঠোর গল্পটি বলতে চাইলেন। উপন্যাসের ভাষা কৌতুকময়তা ও রঙ্গ দিয়ে ঠাসা হলেও সবকিছু ছাপিয়ে যুদ্ধের নির্মম ও সিরিয়াস চেহারাটি দগদগে হয়ে ফুটে উঠেছে। ১৯৬১ সালে প্রকাশিত ঢাউস আকারের এ উপন্যাসটি সরাসরি আমেরিকান ব্যুরোক্রেসি, আর্মি চেইন অব কমান্ড ও ক্যাপিটালিজমকে চ্যালেঞ্জ করে। লেখক ভাষাকে টুইস্ট করে যুদ্ধ ও আমেরিকার শ্রেষ্ঠত্বের ভূমিকাকে সরাসরি উপহাস করেছেন এ উপন্যাসে। মাতবর ও গোঁয়ার দেশ হিসেবে আমেরিকা ‘গণতন্ত্র’ এবং ‘জিতে যাওয়া’ বলতে যা বুঝে থাকে সেটাকে তীব্রভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন উপন্যাসের নানা চরিত্রের ভেতরের কমেডি এবং প্রশ্ন দিয়ে। চরিত্রের ব্যঙ্গাত্মক, অর্থহীন ও পরস্পর সংগতিবিহীন কথাবার্তার ভেতর দিয়ে যুদ্ধের অসাড়তার দিকটিরও ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, লেখক নিজেও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের একজন আমেরিকান যোদ্ধা ছিলেন। টরন্টোর ব্লোর কলেজিয়েট স্কুলের ১২ গ্রেডের এবছরের চলতি সেমিস্টারের পাঠ্যবই ‘ক্যাচ-২২’। উপন্যাসটি আমি নিজে সরাসরি পড়িনি, পড়েছে আমার বড় মেয়ে বর্ণমালা। তবে তার তরফ থেকে পড়াকালীন নিয়মিত আপডেট, গল্প শোনা আর বিশ্লেষণ মোটামুটি বেশ ভালোই ধারণা দিয়েছে আমাকে উপন্যাসটি সম্পর্কে। এ লেখার মোটিভ উপন্যাসের বিষয়বস্তু নয় বরং উপন্যাস কীভাবে স্কুলে পড়ানো হচ্ছে সে বিষয় নিয়ে। প্রতিবছরই ওদের নতুন নতুন উপন্যাস পড়ানো হয়েছে। প্রতিবারের মতোই এ উপন্যাসটি ওদের ক্লাসে পড়ানো শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের বাসায়ও এ বিষয়ক বাতাস বইতে শুরু করে। আমরা উপন্যাসটিকে একজন চাইনিজ/ হাঙ্গেরিয়ান অথবা ব্রিটিশ-কানাডিয়ান স্কুলছাত্রের চোখ দিয়েও উপভোগ করার সুযোগ পেয়ে যাই। অবাক হয়ে লক্ষ করি, ভিন্ন ভিন্ন কালচারাল ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে আসা বাচ্চারা কেমন করে একই ঘটনার ভিন্ন ভিন্ন ব্যাখ্যা হাজির করে! খুবই আনন্দের ঘটনা! এইখানে একটু ফুটনোট দিয়ে রাখি, বর্ণ স্কুলের যে প্রোগ্রামটিতে পড়ে, সেটি আবার একটি বিশেষ সায়েন্স এবং ম্যাথবেজড প্রোগ্রাম, যার একটি আলাদা নামও আছে, ‘টপস প্রোগ্রাম’ নামে। ব্যক্তিগতভাবে আমার সবসময়ই মনে মনে একটা প্রশ্ন ছিল, সায়েন্সবেজড একটা প্রোগ্রামে সাহিত্য কি আর সত্যিই আগ্রহ নিয়ে পড়াবে এরা! কিন্তু আমাকে বিস্মিত করে দিয়ে গত চার বছরে এই প্রোগ্রামে শুধু যে ভালো ভালো কিছু উপন্যাস যেমন ওরেক্স অ্যান্ড ক্রেক (মার্গারেড অ্যাডউড, কানাডা), ওডেসি (হোমার, গ্রিক মিথোলজি), ফ্রাংকেনস্টাইন (মেরি শেলি, ইংল্যান্ড), এক্সিট ওয়েস্ট (মহসিন হামিদ, পাকিস্তান), ক্যাচ-২২ (জোসেফ হিলার, আমেরিকা) পড়িয়েছে তা না, পড়ানোর কায়দাটি দেখেও বিস্মিত হয়েছি!
ক্যাচ-২২ উপন্যাসটি স্কুলে পড়ানোর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাটি এখানে শেয়ার করছি মাত্র। শুরুতে পুরো উপন্যাসটা আগাগোড়া পাঠ করানোর ব্যবস্থা করা হলো। আগেই বলেছি যে এটি একটি ঢাউস উপন্যাস, প্রায় ৫০০ পৃষ্ঠা। ব্যাপারটা এমন, প্রতিটি ছাত্রছাত্রীই যেন শুরুতেই উপন্যাসটি বুঝে উঠবার জায়গাটিতে কম জটিলতায় ভোগে। মনে রাখার ব্যাপার আছে, ছাত্রছাত্রীরা নানান সাংস্কৃতিক ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে আসা এবং ফিকশন পড়াপড়ির অভিজ্ঞতা সবার সমান নাও থাকতে পারে। উপন্যাস নিয়ে আড্ডাবাজির কাজটি যেন স্কুলেই করা সম্ভব সেই সুযোগ দেওয়া স্কুলের দায়িত্ব। পড়ার সময়টি যেন ফাঁকিবাজি না করে, সেটির দেখভাল করা ইংরেজির শিক্ষকের দায়িত্ব। লেখক সম্পর্কে, উপন্যাস সম্পর্কে নানা ম্যাগাজিনে বের হওয়া রিভিউ, খবরের কাগজের ক্লিপ ছাত্রছাত্রীরা হাতের কাছেই পায়, তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তার ওপরে বাড়তি সোর্স হিসেবে ইন্টারনেট তো আছেই। সবার চেয়ে বড় কথা হলো, উপন্যাস পাঠকালীন যে কোনো প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য, বা পাঠ নির্দেশনার জন্য ইংরেজির শিক্ষক অনলাইন এবং অফলাইনে ছাত্রদের কাছে টানা সহজলভ্য থাকছেন। এরপরের কাজ হলো চ্যাপ্টার ভাগ করে দেওয়া যাতে আরও একটু ঘনিষ্ঠভাবে নির্দিষ্ট পরিস্থিতিকে স্ক্যান করা চলে। ছোট ছোট করে দল গঠন করা হলো, প্রতি দলে দুই জন। একেকটি গ্রুপের কাজ হলো তাদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া চ্যাপ্টারটি আরও গভীরভাবে পড়া ও বিশ্লেষণ করা। ছাত্রদের কাজ হলো মূল উপন্যাসের আঙ্গিকে নির্ধারিত চ্যাপ্টারগুলোর প্রতিটি অংশ নানাভাবে বিচার করা, কানেক্ট করা। চ্যাপ্টারের থিম, নাটকীয় মুহূর্ত, কোথায় কোথায় স্যাটায়ার করা হয়েছে এবং কেন, লেখকের অন্যান্য উপন্যাসের সঙ্গে কোনো সংযোগ অথবা পার্থক্য আছে কি-না, লেখকের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার সঙ্গে উপন্যাসের সম্পর্ক, বাক্যের ভেতরের অন্তর্নিহিত অর্থ, কন্ট্রাডিকশান, প্রতিটি চরিত্রের নিখুঁত অবজারভেশন, প্রয়োজনীয়তা, দুর্বলতা, বাহুল্য ইত্যাদি নিয়ে নিজ নিজ গ্রুপের ভেতর আলোচনা করা। শুধু তাই নয়, চিন্তার জগৎকে আরও একটু প্রসারিত করার জন্য উপন্যাসের পটভূমি ধরে ছাত্রদের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয় উপন্যাসের রাজনৈতিক ও বৈশ্বিক বৈচিত্র্যের দিকটি। কোন ধরনের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা সে পুঁজিবাদ বা সমাজতন্ত্র হোক, কীভাবে কাজ করে, বিকশিত হয় এবং শেষাবধি তা ব্যক্তির সামাজিক-মানসিক পরিসর পর্যন্ত কতখানি নিয়ন্ত্রণ করে ইত্যাদি। নিজেদের ভেতর গ্রুপ আলোচনায় বোঝাবুঝি শেষ হলে প্রতিটি গ্রুপের কাজ হলো ক্লাস সেমিনারে উপস্থাপনার জন্য পাওয়ার পয়েন্ট ক্লিপ তৈরি করা। পাওয়ার পয়েন্ট ক্লিপ ছাড়াও তাদের তৈরি থাকতে হবে ক্লাসের অন্য ছাত্রদের উপস্থিত প্রশ্ন মোকাবিলা ও ব্যাখ্যা করার জন্য। ধরা যাক উপস্থাপনা দলটির সদস্য হচ্ছে দুইজন। কাজেই এই দুইজন ছাড়া বাকিরা, মানে ক্লাসের অন্য ছাত্ররা ওইদিনের ক্লাসে শ্রোতা এবং প্রশ্নকর্তা।
আরও মজার ঘটনা আছে এখানে। ক্লাসের মোটমাট শ্রোতাদের আবার দুইভাগে ভাগ করা হয়েছে। একদল ‘ইনার গ্রুপ’ হিসেবে উপস্থাপনা দলটিকে প্রশ্ন করবে, ব্যাখ্যা দাবি করবে, বিশ্লেষণ করতে বলবে অথবা ফিডব্যাক দেবে। শ্রোতাদের দ্বিতীয় দলটি ‘আউটার গ্রুপ’ হিসেবে চুপ থাকবে নিজেদের নোটবুক হাতে নিয়ে। তারা হচ্ছে নীরব অবজারভার। তারা উপস্থাপনা দল এবং ইনার দলকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ করবে এবং নোট নেবে। আউটার দলটির কাজ হলো ওই দুই দলের দক্ষতা, আগ্রহ, কৌতূহল, অ্যাকটিভ অংশগ্রহণ ইত্যাদি পরিমাপ করা। একইভাবে ঘুরে ঘুরে সপ্তাহ দুয়েক ধরে চলবে সেমিনার প্রেজেন্টেশন। ততদিনে, বুঝতেই পারা যাচ্ছে যে উপন্যাসের অস্থিমজ্জা ভাজা ভাজা অবস্থা। আর পুরো সময় জুড়েই শ্রেণিকক্ষের সাহিত্যের শিক্ষকের কাজ হলো এই পুরো প্রক্রিয়ার ডিজাইন করা, ছাত্রদের মোটিভেশন দেওয়া ও ইনভলব করা এবং গ্রেডিং করা। এই প্রক্রিয়ায় একটি দুর্বল ছাত্র ঠিক কোন জায়গাটিতে দুর্বল এবং ঠিক কোন জায়গায় তার সবলতা আছে তা আইডেন্টিফাই করার মাধ্যমে তাকে নম্বর দেওয়া হয়। দেখা যায়, একটি ছাত্র কথা গুছিয়ে বলতে না পারলেও হয়তো তার অবজারভেশন খুব শার্প। আরেকটি ছাত্র হয়তো ভালো তার্কিক, অথবা কেউ হয়তো উপন্যাসের সাব-টেক্স খুব ভালো বিশ্লেষণ করতে পারছে। প্রতিটি ছাত্র ইউনিক, প্রতিটি ছাত্রের ভেতর সম্ভাবনা আছে, প্রতিটি ছাত্রই কোথাও না কোথাও দুর্দান্ত! সবার শেষে, ছাত্ররা আরও কিছুদিন উপন্যাসটি নিজেদের কাছে রাখার সুযোগ পেল যাতে শেষবারের মতো, চাইলে আরও একবার পুরো উপন্যাসটি পড়ার সুযোগ পায়। অবশ্য সেটা অবশ্যপাঠ্য নয় স্কুলের তরফ থেকে। যার যার কৌতূহল থেকে সে সে পড়তে পারে। যদিও, দেখলাম পুরো প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরও বর্ণমালা হুমড়ি খেয়ে আবারও পড়ছে বইটি আর ক্ষণে ক্ষণে বলে উঠছে, “মা, এইবার আমি ভাষাটা পরিষ্কার বুঝতে পারছি, দেখো দেখো অমুকে অমুক কেন বলছে এখন আমি জানি…!”
লেখক কানাডায় কর্মরত নার্স ও প্রবাসী সাংবাদিক